এই বিশ্বসংসারে সূর্য আমাদের অতিপরিচিত দোসর। হৃদ্যতার বন্ধন এতটাই দৃঢ় যে গোধূলিতে বিদায় নিলেও সকালে সে ফিরে আসবেই। তাকে বাদ দিয়ে যেমনি আমাদের অস্তিত্বই কল্পনা করা যায়না তেমনি তার অনুপুস্থিতিতে একটি দিনও আমাদের চলেনা। যেমন তার শক্তি তেমনি তার ত্যাজদীপ্ততা। তাইতো সেই আদিযুগে মানুষ ভেবেছিল সে ই দেবতা আর তাই প্রথম নমস্কারটি জানিয়েছিল এই অগ্নি দেবতাকেই।
একসময় মানুষের ধারনা ছিল এই পৃথিবীই বিশ্ব ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু, যা ‘জিওসেন্ট্রিক থিয়োরী’ নামে বিশ্বখ্যাত হয়েছিল। পিথাগোরাস অঙ্ক কষে দেখিয়ে দিলেন পৃথিবীই বিশ্বভ্রহ্মাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু আর সূর্য চন্দ্র সমেত আরও পাঁচটি গ্রহ মহাকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দার্শনিক এরিষ্টটল এই মতবাদকে সম্মতি দিয়ে পাকাপোক্ত করলেন। গ্রীক জোতির্বিদ টলেমী (জীসু র্খষ্টের জন্মের ১০০ বৎসর পরে) ঘোষনা করলেন,মহা বিশ্বের কেন্দ্রস্থল পৃথিবী একটি স্থির গ্রহ,তার চারিদিকে বক্র আকাশ তার অনড় নক্ষত্র সদস্যদের নিয়ে প্রতি রাতে একবার প্রদক্ষিন করে। এই ধারনাকে পৃথিবীর মানুষ প্রায় ১৫০০ বছর অতি যত্নে লালন করে। ষোল’শ সতাব্দীর মাঝামাঝি এসে কোপার্নিকাস এই মতবাদকে ভেঙে দিয়ে ঘোষনা করলেন, পৃথিবী নয় সূর্যই তার রাজকীয় সিংহাসনে বসে বিশ্ব সংসারকে পরিচালনা করছে। অর্থাৎ সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবী ও অন্যান্ন গ্রহ ঘুরছে। কোপার্নিকাসের এই মতবাদের নাম দেওয়া হল ‘হেলিওসেন্ট্রিক থিওরী’। জোতির্বিদ্যায় এই মতবাদ রেঁনেসার সৃষ্টি করে। সৌর মণ্ডলের কেন্দ্রে অবস্থিত একমাত্র নক্ষত্র হল আমাদের সূর্যো। তার পরিবারে রয়েছে আটটি গ্রহ ,তিনটি বামন গ্রহ, ও বেশ কিছু অ্যাষ্টেরয়েড। গ্রহগুলি হল- বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃস্পতি, শনি, ইউরেনাস, নেপটুন; বামন গ্রহঃ-সেরিস,প্লুটো, অ্যারিস।
প্রতিদিন সকালে রূপের পশরা লয়ে এই যে সুর্যো দেবতা পূবাকাশে দেখা দেয়, আসলে সে একটি অগ্নি গোলক, এক নিউক্লিয়ার চুল্লি।এই চুল্লি প্রতি নিয়ত হাইড্রোজেন পরমানুকে রূপান্তর করে হিলিয়াম উৎপাদন করে আর সেই ফাঁকে উৎপন্ন হয় প্রচুর শক্তি।সেই উৎপন্ন শক্তির সামান্য অংশই আমরা পেয়ে থাকি;যেমন ধরুন,আমরা পেয়ে থাকি প্রতি ১০০ কঠি ভাগে ২ ভাগেরও কম।অথচ দেখুন, সূর্যের এই ত্যাজ্দ্দেীপ্ততার সমান্য হেরফের হলেও আমাদের পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকবেনা। আমরা জানি সূর্যো প্রচণ্ড গতিতে নিজ অক্ষের উপড় ঘুরতে ঘুরতে অসীম গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এক নির্দিষ্ট লক্ষের দিকে;এখানেই শেষ নয়,সূর্যো অন্যান্ন মহাজাগতিক বস্তু নিলয়ের সাথে ছায়াপথের কেন্দ্রকে প্রদক্ষিন করছে। এমতাবস্তায় এই গতিজড়তার মাঝে আমাদের পৃথিবীর কথাটা একবার ভেবে দেখুন দেখি! কত জটীল গতিশীলতার মধ্যে পড়ে আছে সে।প্রথমত আমাদের এই মাতৃ গোলকটি নিজ অক্ষের উপর ঘুরতে ঘুরতে একমাত্র উপগ্রহ চাঁদকে সঙ্গে নিয়ে সূর্যোকে প্রদক্ষিণ করছে;পৃথিবী সমেত সূর্যো তার পরিবার বর্গকে সঙ্গে নিয়ে প্রতি ঘন্টায় সাতলক্ষ কি মি (700,000 km/h) গতিতে তার লক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আর এইভাবে যেতে যেতে ছায়াপথের কেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করছে। এবার তাহলে হিসেব করুন আমাদের পৃথিবী কয়টি গতি অনুভব করছে।কমকরে হলেও চারটি গতিতে গতিমান আমাদের পৃথিবী।কিন্তু কোনদিন কি ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পারছেন য আপনি কোন একটি গতিতে ছুটে চলেছেন।যদি আমাদের পৃথিবীটা তার পারিপার্শিকতার সাথে অতি সূক্ষ সমন্বয়ে সমন্বিত না হতো তবে আমরা পড়ে যেতাম নানা বিপর্যয়ের মুখে।
বিজ্ঞান বলছে জীবনের জন্য প্রয়োজন কার্বন ঘটিত অণু,যা তৈরী হতে পারে -২০ ডিগ্রী সেলসীয়াস থেকে ১২০ ডিগ্রী সেলসীয়াত তাপমাত্রার মধ্যে;অথচ দেখুন মহাশূণ্যের তাপমাত্র এক বিশাল ব্যবধানে রয়েছে,কেথাও -২৭৩.১৫ কেলভিন আবার কোথাও লক্ষ লক্ষ কেলভিন।এই তাপমাত্রার অতি সামান্যই প্রয়োজন কার্বন ঘটিত অণু সৃষ্টির জন্য। কিন্তু কোন কারণে কি এই কার্বন ঘটিত অণু সৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেছে? না বন্ধ হয়ে যায়নি।কারণ এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা সর্বোজান্তা ও সর্বোত্তম কুশলী।
সূধী পাঠক,বিজ্ঞানের জানামতে আমাদের নক্ষত্রটির সম্মন্ধে কিছু সাধারন তথ্য জেনে নেই।
১.আমাদের মাতৃ ছায়াপথে ২০০ বিলিয়ন নক্ষত্রের মধ্যে সূর্য একটি নগন্য নক্ষত্র। তার নিকটতম নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টেরাই,সূর্য থেকে তার দূরত্ব প্রায় ৪.৩ আলোক বর্ষ। পৃথিবী থেকে খালি চোখে দৃশ্যমান ৬০০০ নক্ষত্রের মধ্যে সূর্য উজ্জলতম। প্রতি মুহুর্তে সূর্যের উৎপন্ন শক্তির পরিমান ৩৮৬ বিলিয়ন মেঘা ওয়াট যার মধ্য থেকে প্রতিদিন আমাদের পথিবী ৯৪ বিলিয়ন মেঘা ওয়াট তাপশক্তি পেয়ে থাকে। এই তাপ শক্তি উৎপন্ন করতে প্রতি মুহুর্তে সূর্য ৫ মিলিয়ন টন পদার্থ হারায়। নিউক্লিয়ার ফিউসন বিক্রিয়ায় সূর্য এই তাপশক্তি উৎপাদন করে। এই বিক্রিয়ায় সূর্যের বুকে প্রতি মুহুর্তে ৭০০ মিলিয়ন টন হাইড্রোজেন রূপান্তরিত হয়ে ৬৯৫ মিলিয়ন টন হিলিয়াম উৎপন্ন করে এবং বাকি ৫ মিলিয়ন টন শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। সূর্যের কেন্দ্রের তাপমাত্রা ১৪ মিলিয়ন কেলভিন। এই শক্তি উৎপাদন যদি কোন দিন বন্ধ হয়ে যায় তার পরেও প্রায় ৫০ মিলিয়ন বছর পর্যন্ত পৃথিবী আলো পেতেই থাকবে। সূর্য আলো ছাড়াও প্রচুর পরিমানে ইলেট্রন ও প্রোটন বিচ্ছুরন করে,যাকে সৌর বায়ু বলা হয়। এরা প্রতি সেকেন্ডে ৪৫০ কিমি বেগে ধাবিত হয়। সূর্যের বুকে প্রতি মুহুর্তে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণে যে শিখা উৎপন্ন হচ্ছে তা সূর্য থেকে প্রায় ১০০,০০০ কি মি দূরত্ পযৃন্ত বৃস্তিতি লাভ করছে। সূর্যের মোট পদার্থের পরিমান ১.৯৮৯x১০৩০ কি:গ্রাম। কেন্দ্রে সৌর পদার্থের ঘনত্ব পানির ঘনত্বের ১৫০ গুণ এবং তার কেন্দ্রের চাপ ৩৪০ বিলিয়ন বায়ুমণ্ডলীয় চাপের সমান। সূর্যের তলীয় ক্ষেত্রফল প্রায় ১১৯৯০ টি পৃথিবীর ক্ষেত্রফলের সমান এবং এর আয়তন ১.৩ মিলিয়ন পৃথিবীর সমান। সূর্যপৃষ্টে মধ্যাকর্ষন শক্তি পৃথিবীর প্রায় ২৮ গুণের সমান। অর্থাৎ ৬০ কেজি ভরের একটা মানুষের ওজন হবে ১৬৮০ কেজি। সূর্য পৃষ্ঠ পৃথিবী তলের মত কঠিন নয়,ইহা সম্পূর্ণই গ্যাসীয় পদার্থের তৈরী। এর মধ্যে ওজন অনুযায়ী ৭৩% হাইড্রোজেন,২৫% হিলিয়াম,১.৫% কার্বন,নাইট্রোজেন এবং অক্সিজেন, ০.৫% অন্যান্ন পদার্থ। সূর্যের গড় দূরত্ব ১৪৯.৬০ মিলিয়ন কি মি। সূর্য থেকে সৌর মণ্ডলের প্রান্তিয় গ্রহ প্লুটুতে আলো পৌছাতে সময় লাগে সাড়ে পাঁচ ঘন্টা।
২. সূর্যের বর্তমান বয়স ৪.৭ কোটি বছর এবং তার আনুমানিক পরবর্তী আয়ু প্রায় ৫ কোটি বছর। অত্যাধিক মধ্যাকর্ষনের জন্য সূর্য পৃষ্টে মুক্তি বেগ হল ২.২২ মিলিয়ন কি মি প্রতি ঘন্টায়।
৩. সূর্য ২৫.৩৮ দিনে নিজ অক্ষের চারিদিকে একবার ঘুরে আসে। আবার ২৪০ মিলিয়ন বছরে সূর্য তার মাতৃ ছায়াপথের কেন্দ্রকে প্রদক্ষিন করে। ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে এর দূরত্ব ৩০,০০০ আলোক বর্ষ। এ ছাড়াও সূর্য তার পরিবার সহ প্রতি সেকেন্ডে ২১৭ কি মি বেগে ছায়া পথের কেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করছে।
৪. সূর্য তার জন্মের পর থেকে এ পর্যন্ত তার মাতৃ গ্যালাক্সির কেন্দ্রকে মাত্র ২০বার প্রদক্ষিণ করতে পেরেছে।
৫ সূর্য পৃষ্ঠের প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে আলোর উজ্জলতা প্রায় ১৫,০০,০০০ ক্যান্ডেল পাওয়ারের সমান। পৃথিবীর প্রতি বর্গমিটারে পতিত সূর্যালোকের পরিমান প্রায় ১.৩৭ কি ওয়াট বিদ্যুতের সমান।
৬. সর্বোচ্চ সূর্য গ্রহন সাত মিনিট চল্লিশ সেকেন্ডের বেশী হতে পারেনা। পৃথিবীর কোন স্থানে পূর্ণ সূর্য গ্রহন প্রতি ৩৬০ বছরে একবার দেখা যায়। আর বছরে মাত্র পাঁচ বার সূর্যগ্রহন হতে পারে।
এখন থেকে ১ কোটি ১০ লক্ষ বছর পরে সূর্য বর্তমান থেকে ১০% বেশী উজ্জ্বল দেখাবে এবং তখন পৃথিবীর বায়ু মণ্ডল একেবারে শুকিয়ে যাবে,কোন জলীয় বাস্প থাকবেনা। প্রায় সাড়ে তিন কোটি বছর পর সূর্য বর্তমানের চেয়ে ৪০% বেশী উজ্জ্বল হয়ে উঠবে তখন পৃথিবীর সাগর মহাসাগর শুকিয়ে যাবে ফলে পৃথিবীতে কোন প্রাণীর চিহ্নও থাকবেনা। পাঁচ কোটি বছর পরে সূর্য় যদি ব্লাকহোলে নিপতিত না হয় তবে ৫.৪ কোটি বছর পরে সূর্যের সমগ্র হাইড্রোজেন জ্বালানী শেষ হয়ে আসবে আর ৭.৭ কোটি বছর পরে লাল দানবে পরিনত হবে এব বর্তমানের চেয়ে ২০০ গুণ বড় হয়ে যাবে এবং বুধ গ্রহকে সম্পূর্ণ রূপে গ্রাস করবে। ৭.৯ কোটি বছর পরে সূর্য সাদা বামনে পরিনত হবে এবং গ্রহদের কক্ষ ব্যাসার্ধ হয়ে যাবে বর্তমানের দ্বিগুণ। তারপর অনির্দিষ্ট সময়ের জন্যে সাদা বামন হয়েই থাকবে। এবার আমাদের সৌর জগতের হিসাব রক্ষক,সবচেয়ে বড় কুশলী; তিনি জানতেন সৃষ্টি জগতে কালের বিবর্তনে কখন কোথায় কি প্রয়োজন হবে,ঠিক সেবাবেই তিনি সৃষ্টি শুরু করেছেন ও সবকিছু তাঁর নিয়ন্ত্রনে।সূরা রা’দ এর ২ নং আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন;
هُ الَّذِي رَفَعَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِي لأَجَلٍ مُّسَمًّى يُدَبِّرُ الأَمْرَ يُفَصِّلُ الآيَاتِ لَعَلَّكُم بِلِقَاء رَبِّكُمْ تُوقِنُونَ
১৩:২ আল্লাহ, যিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত। তোমরা সেগুলো দেখ। অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। এবং সূর্য ও চন্দ্রকে কর্মে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকে নির্দিষ্ট সময় মোতাবেক আবর্তন করে। তিনি সকল বিষয় পরিচালনা করেন, নিদর্শনসমূহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা স্বীয় পালনকর্তার সাথে সাক্ষাত সম্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাসী হও।
আমরদের এই প্রাণীজগৎকে সৃষ্টির লক্ষে তিঁনি আমাদেরপৃথিবীকে ষ্থাপন করেছেন সূর্যো থেকে ১৫ কোটী (150 million)কি মি দূরে। তিঁনি পৃথিবীকে দিয়েছেন তীর্যোকতা। সূধী পাঠক, আজকের বিজ্ঞান স্তম্ভিত হয়ে ভাবছে,পৃখিবী কিবাবে পেল এই তীর্যোকতা।মহাবিশ্বে গ্রহ উপগ্রহেরতো অভাব নেই; অথচ আমাদের পৃথিবী একটা সুনির্দিষ্ট অবস্থান পেয়ে হয়ে উঠেছে অসীম সংখ্যক প্রাণের আবাস স্থল।এই তীর্যোকতা পৃথিবীকে দিয়েছে বিষ্ময়কর বৈচিত্রতা; যা দেখে কোন চিন্তাশীল মানুষ বলতে পারেনা ‘এই বৈচিত্রতা আপনা আপনি তৈরী হয়েছে।’ যদি কউ বলেন,হয় তিনি নিতান্ত শত্রুতা করে বলেন,নয় বিবেকের বিরুদ্ধে বলেন।
বিজ্ঞান বলছে সূর্যোপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ছয় হাজার ডিগ্রী সেলসিয়াস; আর কেন্দ্রের তাপমাত্রা পনের মিলিয়ন ডিগ্রিী সেলসিয়াস।একবার ভাবুন কে এই দূরত্ব নির্ধারন করেছে, যে দূরত্বে কোন এক সহনীয় তাপমাত্রায় পৃথিবীর বুকে সৃষ্টি হবে প্রাণীকুল?হয়তো বলবেন পৃথিবী,সূর্যের সাথে তার ভরের অনুপাতে এ অবস্থান পেয়েছে।আর এটাই হল প্রকৃত বাস্তবতা ও পদার্থের ধর্ম।আর এখানেই স্রষ্টার কৃতিত্ব যে, তিনি এমনি সুনির্দিষ্ট পরিমানে পৃথিবীর ভর ও আকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন যে,মহাকর্ষের হিসেব নিকেষে পৃথিবী একটি সঠিক অবস্থান পেয়েছে,যে কারণে পৃথিবীর পরিমণ্ডলে প্রাণ সৃষ্টির পরিবেশ তৈরী হয়েছে।আর এই হিসেব সম্ভব শুধুমাত্র মহান স্রষ্টার পক্ষেই কোন পরিবেশ বিজ্ঞানীর পক্ষে নয়।তাইতো মহান আল্লাহ সূরা ত্বোয়া’হা এর ৯৮ নং আয়াতে বলছেন,
إِنَّمَا إِلَهُكُمُ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ وَسِعَ كُلَّ شَيْءٍ عِلْمًا
২০:৯৮ তোমাদের ইলাহ তো কেবল আল্লাহই, যিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই। সব বিষয় তাঁর জ্ঞানের পরিধিভুক্ত।
সূর্য তার গন্তব্য লক্ষে চলমান
38- And the Sun moves on to its destination. That is the
ordinance of the Mighty, the Knower.
36-Ya-Seen, 38
وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَّهَا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
৩৬:৩৮ সূর্য তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে চলমান । এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ, আল্লাহর নিয়ন্ত্রণ
অতীতে মানুষ ভাবতো পৃথিবী স্থির সূর্যো তার চারিদিকে ঘুরছে।পরবর্তীতে কোপার্নিকাস, গ্যালেলিও প্রমুখ বিজ্ঞানীগণ বর্ণনা করেন যে, সূর্যো স্থির পৃথিবী তার চারিদিকে ঘুরছে। তার পর আবিস্কৃত হল অত্যাধুণিক দূরবীণ; মানুষ আকাশের দিকে তাকিয়ে অবাক বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে গেল, আবিস্কৃত হল মহাবিশ্বের সৃষ্টি সংক্রান্ত নানা তত্ত্ব।দেখা গেল যে সূর্যোকে এতদিন স্থির ভাবা হত তা আর স্থির নেই; আপন অক্ষের উপর ভন ভন করে ঘুরছে, সে এক অস্বাভাবিক দ্রুতিতে ঘুরছে, হিসেব কষে দেকা গেল মাত্র ২৫ দিনে এতবড় দেহটাকে একবার ঘুরিয়ে নিয়ে আসছে। আবার পৃথিবী নিজ অক্ষের উপর ঘুরতে ঘুরতে প্রচণ্ড গতিতে সূর্যোকে প্রদক্ষিন করছে। আপাত দৃষ্টিতে সূর্যের কোন পরিক্রমন গতি না থাকলেও দেখা গেছে সে, সে এক বিশাল কক্ষপথে অণ্যান্ন সমল মহাজাগতিক বস্তু নিলয়ের সাথে আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রকে প্রদক্ষিন করছে। অসীম গতিতে এই কেন্দ্রকে একবার ঘুরে আসতে তার সময় লাগে মাত্র প্রায় ২৫ কোটী বছর। সুর্যের এই নানাবিধ গতি আবিস্কৃত হয়েছে বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে। অথচ দেখুন পবিত্র কোরআন কি গাম্ভীর্জতার সাথেইনা বর্ণনা করেছে উপরউক্ত আয়াত। যেখানে বলা হয়েছে ‘সূর্য তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে চলমান’; ১৪০০ বছর আগে অবর্তীর্ণ এই বাণী, কি করে বলবেন মানব রচিত? যদি বলেন এ তথ্য নবী মোহান্মদ (সাঃ) এর রচিত, তবে যে আজকের এই পরিক্ক বিজ্ঞানকে অবনত হয়ে বলতে হয় ‘সেই বেদুইন মরুচারী কোন মানব শিশু নয়,নিশ্চই কোন অলৌকিক প্রাণী।
বিজ্ঞানকে কোন বিষয়ে কিছু বলতে হলে তার সর্বাগ্রে প্রয়োজন বিষয়টির সম্ভাব্যতা, যৌক্তিকতা জানা, তারপর পরীক্ষা নীরিক্ষার মাধ্যামে যথেষ্ট প্রমাণ হাজির করে সিন্ধান্তের মাধ্যামে সে বিষয়টি বর্ণনা করা।পবিত্র কোরআন হল এই মহাবিশ্বের স্রষ্টার ভাস্য,তিনি তাঁর কথায় এই বর্ণনা করেছেন।তাঁর বর্ণনার ধারা সম্পূর্ণ তাঁর নিজস্ব।বিজ্ঞানের বর্ণনা ভিন্ন ধারার। পবিত্র কোরআনের বিজ্ঞান সম্পর্কীয় মৌলিক বিষয়গুলো ঐ ভাবেই সুনির্দিষ্ট হয়ে আছে,যাতে তার প্রকাশ ঘটতে হাজার বছর কেটে যায়; কারণ তার জন্যে প্রয়োজন মানুষের বিজ্ঞান মনস্কতা তৈরী; আর তা সম্ভব শুধুমাত্র তখনই যখন বিজ্ঞানের অর্জিত মেধা কোরআনের এই ভাস্য বুঝার পর্যায়ে উন্নীত হবে। ঘটানা চক্রে ঘটেছেও তাই। ভাল করে লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন, বৈজ্ঞানিক ধারণা সমৃদ্ধ আয়াতগুলোর প্রচলিত তরজমায় কালের পরিক্রমায় লভ্য শব্দের ব্যবহার ঘটেছে।বিজ্ঞাণের আবিস্কারের পর দেখা যাচ্ছে যে,ব্যবহৃত শব্দের মধ্যে হচ্ছে বিবর্তন।তার অর্থ এই নয় যে, বিজ্ঞানের পরিভাষার সাথে মিলিয়ে কোরআনের তরজমায় বিবর্তন আনা হচ্ছে! ভাল করে খুঁজে দেখলেই দেখা যাবে যে, বিজ্ঞানের আবিস্কৃত মর্ম কথাটাই পবিত্র কোরআনে প্রচ্ছন্ন হয়ে আছে আমাদের বুঝার ভুলে বা সঠিক শব্দ প্রয়োগের অভাবে।তাছাড়া পবিত্র কোরআনে বিজ্ঞানময় কথাগুলোর লক্ষই হল বিজ্ঞানকে সহজোগিতা করা,নিজের কৃতিত্ব জাহির করা নয়। যদি কৃতিত্ব জাহির করার লক্ষ্যে তা হত তবে তা বিজ্ঞানের আবিস্কারের সমান্তরালে চলতো। কিন্তু না! সবগুলো আয়াতই অবতীর্ণ হয়েছে বিজ্ঞানের নিতান্ত শিশুকালে, ঐতিহাসিক দিক থেকে পবিত্র কোরআন আজকের বিজ্ঞানের পথপ্রদর্শক।কোরআন দিয়ে রেখেছে ধারনা বিজ্ঞান দিয়েছে পূর্ণতা।কোরআন বিজ্ঞনের পুরক। কোনক্রমেই বিজ্ঞান তা নয়।কারণ বিজ্ঞানের কোন কথা দিয়ে কোরআনকে ব্যাখ্যা করা যায়না কিন্তু বিজ্ঞানের সকল কথাই কোরআনে নিহিত হয়ে আছে।বিজ্ঞান শিক্ষানবিশ,কোরআন শিক্ষাগুরু; কোরআন দিয়েছে তথ্য বা শেষ বর্ণনা আর বিজ্ঞান এনেছে পরিপূর্ণতা। বিজ্ঞান যেখানে হোঁচট খেয়েছে সেখানে থমকে দাড়িয়েছে, সম্ভাব্য দর্শন দিয়ে যাচাই বাছাই করে এগিয়ে নিয়ে গেছে তার তত্ত্বকে। কিন্তু কোরআন কোথাও থমকে দাঁড়ায়নি;কারণ কোরআন এসেছে সেই স্রষ্টার কাছ থেকে যিনি বিজ্ঞানের সব নিয়মকানুনকে প্রকৃতির মধ্যে সেটেদিয়েছেন।সুতরাং বিজ্ঞান ও কোরআনের স্রষ্টা একই। কোথাও কোন বিরোধ নেই, বিরোধ যে টুকু রয়েছে তা আমাদেরই সৃষ্টি। আমাদের আবেগ ও মনের দীনতা এ বিরোধের সৃষ্টি করেছে।কোরআন দিয়ে রেখেছে সুনির্দিষ্ট ধারনা; আর বিজ্ঞান ঘুর পথে সেই কথাকেই প্রমাণ করেছে।এমনও হতেপারে বিজ্ঞান পবিত্র কোরআন থেকে জেনেই তা পরীক্ষা নীরিক্ষার মাধ্যামে সঠিক সত্য বলে মানুষের সামনে তুলে ধরেছে বা বিজ্ঞান নিজে থেকে চিন্তাভাবনা করেই সঠিক তথ্য নিরূপন করেছে। যেভাবেই হোকনা কেন কোরআন যে বিষ্ময়কর তথ্যর সমাবেশ ঘটিয়েছে তার জন্যে কোন সাক্ষী প্রমাণের প্রয়োজন নেই;কারণ পবিত্র কোরআনের আয়াতগুলোই স্বপ্রতিভাত।কোরআনের স্রষ্টা সর্বজান্তা,সর্বজ্ঞানী ও সর্বশক্তিমান;ফলে তাঁর বক্তব্যে এমন কিছু থাকতে পারেনা যা কালের পরিক্রমায় পরিবর্তীত হয়ে নতুন রূপ নিতে পারে।একমাত্র তিনিই অতীত ভবিষ্যতকে একত্রিত করে বর্তমানকে তৈরী করতে পারেন;সুতরাং তাঁর বক্তবে কোন শূণ্যতা বা ব্যখ্যাহীনতা থাকতে পারেনা।কোন ব্যাখ্যাকারী আয়াতের সঠিক ব্যখ্যা দিতে পারেনি বলেই যে তা অযৌক্তিক প্রতিপন্ন হবে তা কিন্তু নয়,তা আমার ব্যর্থতা,পবিত্র কোরআনের নয়। কিন্তু বিজ্ঞানের বেলায় আমরা এমনটা দেখিনা; আমরা দেখেছি কালের পরিক্রমায় অনেক তত্ত্ব ও তথ্য ফিকে হয়ে গেছে,নতুন এসে কোন কোনটিকে স্থলাভিষিক্ত করছে।বিজ্ঞান কোন কিছুকেই নিত্য বলে মানতে নারাজ।এই দেখুননা,আজকের বিজ্ঞানের কাছে সু প্রসিদ্ধ বিগব্যঙ তত্ত্ব ও অনেকটা ফিকে হয়ে এসেছে, বিজ্ঞানের কাছে যদি নতুন কোনতত্ত্ব প্রমাণ এসে হাজির হয় তবে হয়তো বিগব্যঙ নতুন সাজে সেজে উঠবে। কিন্তু কোরআণের তথ্যে কোন রকম পরিবর্তনের সুযোগ নেই।ফলে ভাবুক সম্প্রদায়, যারা পবিত্র কোরআনের বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলিকে বজ্ঞানের সাথে মিলিয়ে নিতে চাচ্ছেন, বিজ্ঞানের দ্বারা পবিত্র কোরআনের বাণীগুলিকে অনুমুদিত করিয়ে নিতে চাচ্ছেন,মোট কথা কোরআনের সাথে বিজ্ঞানের একটা সেতুবন্ধন রচনার প্রয়াসে সচেষ্ট তাদর জন্যে এটি বড়ই দুঃসংবাদ।তবে একটা কথা নির্দ্ধিধায় বলা যায় যে,কোরআনের সাথে বিজ্ঞানের এমন কোন দূরত্ব নেই যে সেখানে কোন সেতুবন্ধনের প্রয়োজন আছে। আমরা যদি কোন স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে সেই দূরত্ব তৈরী করি তবে সেখানেতো কোন সেতুবন্ধের প্রয়োজন নেই,প্রয়োজন হল বিরোধ নিস্পত্তি।
বিজ্ঞানকে কোন বিষয়ে কিছু বলতে হলে তার সর্বাগ্রে প্রয়োজন বিষয়টির সম্ভাব্যতা, যৌক্তিকতা জানা, তারপর পরীক্ষা নীরিক্ষার মাধ্যামে যথেষ্ট প্রমাণ হাজির করে সিন্ধান্তের মাধ্যামে সে বিষয়টি বর্ণনা করা।পবিত্র কোরআন হল এই মহাবিশ্বের স্রষ্টার ভাস্য,তিনি তাঁর কথায় এই বর্ণনা করেছেন।তাঁর বর্ণনার ধারা সম্পূর্ণ তাঁর নিজস্ব।বিজ্ঞানের বর্ণনা ভিন্ন ধারার। পবিত্র কোরআনের বিজ্ঞান সম্পর্কীয় মৌলিক বিষয়গুলো ঐ ভাবেই সুনির্দিষ্ট হয়ে আছে,যাতে তার প্রকাশ ঘটতে হাজার বছর কেটে যায়; কারণ তার জন্যে প্রয়োজন মানুষের বিজ্ঞান মনস্কতা তৈরী; আর তা সম্ভব শুধুমাত্র তখনই যখন বিজ্ঞানের অর্জিত মেধা কোরআনের এই ভাস্য বুঝার পর্যায়ে উন্নীত হবে। ঘটানা চক্রে ঘটেছেও তাই। ভাল করে লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন, বৈজ্ঞানিক ধারণা সমৃদ্ধ আয়াতগুলোর প্রচলিত তরজমায় কালের পরিক্রমায় লভ্য শব্দের ব্যবহার ঘটেছে।বিজ্ঞাণের আবিস্কারের পর দেখা যাচ্ছে যে,ব্যবহৃত শব্দের মধ্যে হচ্ছে বিবর্তন।তার অর্থ এই নয় যে, বিজ্ঞানের পরিভাষার সাথে মিলিয়ে কোরআনের তরজমায় বিবর্তন আনা হচ্ছে! ভাল করে খুঁজে দেখলেই দেখা যাবে যে, বিজ্ঞানের আবিস্কৃত মর্ম কথাটাই পবিত্র কোরআনে প্রচ্ছন্ন হয়ে আছে আমাদের বুঝার ভুলে বা সঠিক শব্দ প্রয়োগের অভাবে।তাছাড়া পবিত্র কোরআনে বিজ্ঞানময় কথাগুলোর লক্ষই হল বিজ্ঞানকে সহজোগিতা করা,নিজের কৃতিত্ব জাহির করা নয়। যদি কৃতিত্ব জাহির করার লক্ষ্যে তা হত তবে তা বিজ্ঞানের আবিস্কারের সমান্তরালে চলতো। কিন্তু না! সবগুলো আয়াতই অবতীর্ণ হয়েছে বিজ্ঞানের নিতান্ত শিশুকালে, ঐতিহাসিক দিক থেকে পবিত্র কোরআন আজকের বিজ্ঞানের পথপ্রদর্শক।কোরআন দিয়ে রেখেছে ধারনা বিজ্ঞান দিয়েছে পূর্ণতা।কোরআন বিজ্ঞনের পুরক। কোনক্রমেই বিজ্ঞান তা নয়।কারণ বিজ্ঞানের কোন কথা দিয়ে কোরআনকে ব্যাখ্যা করা যায়না কিন্তু বিজ্ঞানের সকল কথাই কোরআনে নিহিত হয়ে আছে।বিজ্ঞান শিক্ষানবিশ,কোরআন শিক্ষাগুরু; কোরআন দিয়েছে তথ্য বা শেষ বর্ণনা আর বিজ্ঞান এনেছে পরিপূর্ণতা। বিজ্ঞান যেখানে হোঁচট খেয়েছে সেখানে থমকে দাড়িয়েছে, সম্ভাব্য দর্শন দিয়ে যাচাই বাছাই করে এগিয়ে নিয়ে গেছে তার তত্ত্বকে। কিন্তু কোরআন কোথাও থমকে দাঁড়ায়নি;কারণ কোরআন এসেছে সেই স্রষ্টার কাছ থেকে যিনি বিজ্ঞানের সব নিয়মকানুনকে প্রকৃতির মধ্যে সেটেদিয়েছেন।সুতরাং বিজ্ঞান ও কোরআনের স্রষ্টা একই। কোথাও কোন বিরোধ নেই, বিরোধ যে টুকু রয়েছে তা আমাদেরই সৃষ্টি। আমাদের আবেগ ও মনের দীনতা এ বিরোধের সৃষ্টি করেছে।কোরআন দিয়ে রেখেছে সুনির্দিষ্ট ধারনা; আর বিজ্ঞান ঘুর পথে সেই কথাকেই প্রমাণ করেছে।এমনও হতেপারে বিজ্ঞান পবিত্র কোরআন থেকে জেনেই তা পরীক্ষা নীরিক্ষার মাধ্যামে সঠিক সত্য বলে মানুষের সামনে তুলে ধরেছে বা বিজ্ঞান নিজে থেকে চিন্তাভাবনা করেই সঠিক তথ্য নিরূপন করেছে। যেভাবেই হোকনা কেন কোরআন যে বিষ্ময়কর তথ্যর সমাবেশ ঘটিয়েছে তার জন্যে কোন সাক্ষী প্রমাণের প্রয়োজন নেই;কারণ পবিত্র কোরআনের আয়াতগুলোই স্বপ্রতিভাত।কোরআনের স্রষ্টা সর্বজান্তা,সর্বজ্ঞানী ও সর্বশক্তিমান;ফলে তাঁর বক্তব্যে এমন কিছু থাকতে পারেনা যা কালের পরিক্রমায় পরিবর্তীত হয়ে নতুন রূপ নিতে পারে।একমাত্র তিনিই অতীত ভবিষ্যতকে একত্রিত করে বর্তমানকে তৈরী করতে পারেন;সুতরাং তাঁর বক্তবে কোন শূণ্যতা বা ব্যখ্যাহীনতা থাকতে পারেনা।কোন ব্যাখ্যাকারী আয়াতের সঠিক ব্যখ্যা দিতে পারেনি বলেই যে তা অযৌক্তিক প্রতিপন্ন হবে তা কিন্তু নয়,তা আমার ব্যর্থতা,পবিত্র কোরআনের নয়। কিন্তু বিজ্ঞানের বেলায় আমরা এমনটা দেখিনা; আমরা দেখেছি কালের পরিক্রমায় অনেক তত্ত্ব ও তথ্য ফিকে হয়ে গেছে,নতুন এসে কোন কোনটিকে স্থলাভিষিক্ত করছে।বিজ্ঞান কোন কিছুকেই নিত্য বলে মানতে নারাজ।এই দেখুননা,আজকের বিজ্ঞানের কাছে সু প্রসিদ্ধ বিগব্যঙ তত্ত্ব ও অনেকটা ফিকে হয়ে এসেছে, বিজ্ঞানের কাছে যদি নতুন কোনতত্ত্ব প্রমাণ এসে হাজির হয় তবে হয়তো বিগব্যঙ নতুন সাজে সেজে উঠবে। কিন্তু কোরআণের তথ্যে কোন রকম পরিবর্তনের সুযোগ নেই।ফলে ভাবুক সম্প্রদায়, যারা পবিত্র কোরআনের বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলিকে বজ্ঞানের সাথে মিলিয়ে নিতে চাচ্ছেন, বিজ্ঞানের দ্বারা পবিত্র কোরআনের বাণীগুলিকে অনুমুদিত করিয়ে নিতে চাচ্ছেন,মোট কথা কোরআনের সাথে বিজ্ঞানের একটা সেতুবন্ধন রচনার প্রয়াসে সচেষ্ট তাদর জন্যে এটি বড়ই দুঃসংবাদ।তবে একটা কথা নির্দ্ধিধায় বলা যায় যে,কোরআনের সাথে বিজ্ঞানের এমন কোন দূরত্ব নেই যে সেখানে কোন সেতুবন্ধনের প্রয়োজন আছে। আমরা যদি কোন স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে সেই দূরত্ব তৈরী করি তবে সেখানেতো কোন সেতুবন্ধের প্রয়োজন নেই,প্রয়োজন হল বিরোধ নিস্পত্তি।
সূধী পাঠক, একবার কায়মনে ভেবে দেখুন,এপর্যোন্ত আমরা পবিত্র কোরআনে সামান্য যে টুকু আলোচনা করেছি তাতে কি কোথাও কোন বৈপরীত্য রয়েছে? মোটেও নেই।পবিত্র কোরআন ১৪০০ বছর আগে যা বর্ণনা করে রেখেছে,বিজ্ঞান একে একে তারই পরিস্ফূটন ঘটাছে। এইতো সেদিন তিন পদার্থ বিজ্ঞানী মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ তত্ত্ব প্রমান করে নোবেল পেলেন; ঠিক হুবহু তথ্য পবিত্র কোরআন ৫১:৪৭ আয়াতে বর্ণনা করে রেখেছে।এখন আমরা যদি কোরআনের আয়াতের দিকে না তাকিয়ে,চিন্তাভাবনা না করে ভাবি, পবিত্র কোরআন ধর্মীয় বাণী,একে নিয়ে চিন্তা ভাবনা চলেনা, আর শুধু বলি, বিজ্ঞান ও কোরআন পরস্পর বিরোধী; তাহলেতো চলেনা। হয়তো বলবেন; যেখানে দিব্যদৃষ্টিতেই দেখো যাচ্ছে কোরআন ও বিজ্ঞানের মধ্যে বিরোধ,তাকে কিভাবে মিল বলে ধরবো?কোরআনের সাথে বিজ্ঞানের তথ্য মিলছেনা বলে আপনি যে বিজ্ঞানের কথাটাকে নীরেট সত্য বলে দাবী করবেন সে সুযোগ কিন্তু খোদ বিজ্ঞানেও নেই।আজকের সত্য কাল যখন মিথ্যে হয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞান কিন্তু হাসিমুখে তা ফেলে দিচ্ছে;কারণ বিজ্ঞান সর্ব কালেই সত্যের অনুসারী। তন্মধ্যে যারা নিজের আবেগ উচ্ছলতাকে বিজ্ঞান বলে চালিয়ে দিতে চায়,তারাতো বিজ্ঞানের সাথে বেইমানী করে। ফলে বিজ্ঞানকে আপনি কোন রকমেই আপন স্বার্থের চরিতার্থতা দিয়ে কলুষিত করতে পারেননা,তা হবে স্বৈরাচারী বিজ্ঞান র্চচ।বিজ্ঞান কোন জাতি গোষ্টির নয় তা সমগ্র প্রাণীর কারণ বিজ্ঞান কারোর সৃষ্টি নয়,এটি মহান স্রষ্টার দান;বিজ্ঞান পদার্থের ধর্ম যা স্রষ্টার সৃষ্টি।সুতরাং কোন শ্রেনী-গোষ্টি তাকে নিয়ে টানাটানি করা মূর্খতা।সুধী পাঠক কোরআনের কথা সবই নিত্য কারণ এগুলো সেই সকল দর্শী স্রষ্টার বাণী যার বানীতে নীরেট সত্যেরই প্রকাশ ঘটেছে, যার প্রমাণ পরীক্ষালব্দ নয়,তার প্রমাণ কালের বিবর্তনের ধারায় খোঁদ বিজ্ঞান নিজে।বিজ্ঞান তার প্রাক্কলিত সমস্যার সমাধান খোঁজে বিভিন্ন পর্যায়ের পরিক্ষিত ফলাফলের উপর,কারণ কোন্ পর্যায়ে কি ঘটবে তা বিজ্ঞানের জানা নেই। তাই তাকে অপেক্ষা করতে হয় পরীক্ষার ফলাফলের উপর। কিন্তু কোরআন সেই স্রষ্টার বাণী যিনি সবকিছু জানেন,তাই কোরআনের তথ্য সমুহ পরীক্ষার দ্বারা যাছাই বাছাইয়ের দরকার হয়না। বিজ্ঞান কষ্টি পাথরে যাচাই করে যা নিয়ে আসে তাই দেখা যায় কোরআনে কাল অক্ষরের মাঝে ঘুমিয়ে আছে।
সুধী পাঠক, আজকের বিজ্ঞান তার সকল সাধ্য দিয়ে পরীক্ষা নীরিক্ষার মাধ্যামে দিয়ে সূর্যের যে বর্ণনা দিয়েছে, পবিত্র কোরআন ১৪০০ বছর আগেই তার সারমর্ম করে রেখেছে; কারন কোরআন সকল জান্তা মহা কুশলী মহান আল্লাহর বাণী ।
إِنَّمَا إِلَهُكُمُ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ وَسِعَ كُلَّ شَيْءٍ عِلْمًا
২০:৯৮ তোমাদের ইলাহ তো কেবল আল্লাহই, যিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই। সব বিষয় তাঁর জ্ঞানের পরিধিভুক্ত।
20:98- Your only god is God. There is no other god but He.His knowledge encompasses all things.
প্রবন্ধটি বিভিন্ন ওয়েভসাইটের সহযোগিতায় প্রণিত
সোর্স ==>> -আবদুল আজিজ খন্দকার-
No comments :
Post a Comment